উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য এই আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব জানা অনেক জড়ুরি । তাই আজকের পোষ্টে তোমাদের জন্য আমরা এই আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যাও মূলভাব নিইয়ে হাজির হয়েছি। চলো তাহলে এখন আমরা এই আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব জেনে নেওয়া শুরুকরি
আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব
নিচে সুন্দরভাবে এই আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব বিশ্লেষন করা সহ এই কবিতা সম্পর্কে আরোও আলোচনা করা হলো।
কবিতার পাঠ পরিচিতি
‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতাটি ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে।
কবি কবিতায় নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন। কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণের এ বয়সটি উত্তেজনার, প্রবল আবেগ ও উচ্ছ্বাসের এবং জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার উপযোগী সময়। আঠারো বছর বয়সের ধর্ম- আত্মত্যাগের মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়া।
কবিতাটি ৬ মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। পূর্ণপর্ব ৬ মাত্রা এবং অপূর্ণপর্ব ২ মাত্রা। প্রতি চরণে মাত্রাসংখ্যা (৬ + ৬ + ২) = ১৪ টি। কবিতায় স্তবক ৮ টি। লাইন ৩২ টি।
এই কবিতার শব্দার্থ ও টীকা
দুঃসহ- সহনীয় নয় এমন। অসহ্য।
পাথর-বাধা- কঠিন অন্তরায়
স্পর্ধা- বড়াই, গর্ব, অহংকার
সঁপে- সমর্পণ করে।
অহরহ- সর্বদা, সতত।
দুর্বার- দুর্দমনীয়, যা নিবারণ করা কঠিন।
অবিশ্রান্ত- একটানা।
অগ্রণী- শ্রেষ্ঠ, প্রধান।
রক্তদানের পুণ্য- রক্ত দিতে জানে এমন।
➤ জয়ধ্বনি- জয়সূচক শব্দ, জয়ের আনন্দে উচ্চারিত ধ্বনি।
দীর্ঘশ্বাস-প্রসারিত নিঃশ্বাস, কষ্টের সময়ে নেওয়া নিঃশ্বাস।
➤ বিক্ষত- বেশি পরিমাণে কর্তিত।
আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা
কবি: সুকান্ত ভট্টাচার্য
রচনাকাল: ১৯৪২ সাল
বিষয়বস্তু:
এই কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য আঠারো বছর বয়সের তীব্র আবেগ, সাহস, দুঃসাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের भावना তুলে ধরেছেন। তিনি এই বয়সকে ‘জীবনের ঝড়ের মুখ’ বলে অভিহিত করেছেন।
কবিতাটির ব্যাখ্যা:
- প্রথম চরণ: কবি বলছেন যে, আঠারো বছর বয়স মানুষের জীবনে এক ঝড়ের মুখ। এই বয়সে মানুষের মনে তীব্র আবেগ, সাহস, দুঃসাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের भावना জাগ্রত হয়।
- দ্বিতীয় চরণ: কবি আঠারো বছর বয়সের মানুষকে ‘জ্বলন্ত অগ্নি’র সাথে তুলনা করেছেন। তাদের মনে বিদ্রোহের আগুন জ্বলজ্বল করে।
- তৃতীয় চরণ: কবি বলছেন যে, এই বয়সে মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং সত্যের পক্ষে লড়াই করে।
- চতুর্থ চরণ: কবি আঠারো বছর বয়সের মানুষকে ‘দুর্বার স্রোত’-এর সাথে তুলনা করেছেন। তাদের কেউ থামাতে পারে না।
- পঞ্চম চরণ: কবি বলছেন যে, এই বয়সে মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায় না। তারা তাদের আদর্শের জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।
- ষষ্ঠ চরণ: কবি আঠারো বছর বয়সের মানুষকে ‘ঝড়ের পাখি’-র সাথে তুলনা করেছেন। তারা ঝড়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায় না।
- সপ্তম চরণ: কবি বলছেন যে, এই বয়সে মানুষ জীবনের সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যায়।
- অষ্টম চরণ: কবি আঠারো বছর বয়সের মানুষকে ‘নতুন জীবনের স্রষ্টা’-র সাথে তুলনা করেছেন। তারা পুরোনো জীর্ণ ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন জীবন গড়ে তোলে।
উপসংহার:
আঠারো বছর বয়স কবিতা আঠারো বছর বয়সের তীব্র আবেগ, সাহস, দুঃসাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের भावना তুলে ধরে। এই কবিতা তরুণদের অনুপ্রাণিত করে তাদের আদর্শের জন্য লড়াই করতে এবং পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে।
আঠারো বছর বয়স কবিতার মূলভাব
এই কবিতার মূলভাব হলো আঠারো বছর বয়সের তীব্র আবেগ, সাহস, দুঃসাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের भावना। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এই বয়সকে ‘জীবনের ঝড়ের মুখ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এই ঝড়ের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তরুণদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
কবিতাটির মূলভাবের সারসংক্ষেপ:
- আঠারো বছর বয়সের বৈশিষ্ট্য: কবি এই বয়সকে তীব্র আবেগ, সাহস, দুঃসাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের भावना দ্বারা চিহ্নিত করেছেন।
- জীবনের ঝড়ের মুখ: কবি এই বয়সকে ‘জীবনের ঝড়ের মুখ’ বলে অভিহিত করেছেন। এই বয়সে মানুষ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।
- বিদ্রোহ এবং প্রতিবাদ: কবি বলছেন যে, এই বয়সে মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং সত্যের পক্ষে লড়াই করে।
- মৃত্যুকে ভয় না পাওয়া: কবি বলছেন যে, এই বয়সে মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায় না। তারা তাদের আদর্শের জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।
- নতুন জীবনের স্রষ্টা: কবি আঠারো বছর বয়সের মানুষকে ‘নতুন জীবনের স্রষ্টা’-র সাথে তুলনা করেছেন। তারা পুরোনো জীর্ণ ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন জীবন গড়ে তোলে।
উপসংহার:
আঠারো বছর বয়স কবিতা আঠারো বছর বয়সের তীব্র আবেগ, সাহস, দুঃসাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের भावना তুলে ধরে। এই কবিতা তরুণদের অনুপ্রাণিত করে তাদের আদর্শের জন্য লড়াই করতে এবং পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে।