এশার নামাজ ১৭ রাকাত কি কি বিস্তারিত

আজকের এই পোষ্টে আপনাদের সাথে আমরা এই এশার নামাজ ১৭ রাকাত কি কি সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে এক এক করে আলোচনা শুরু করা যাক।

এশার নামাজের ১৭ রাকাত বিস্তারিত

এশার নামাজ ১৭ রাকাত পড়ার রীতি কিছু কিছু মতান্তরে বর্ণিত আছে। তবে, সকলের জন্য এটি গ্রহণযোগ্য নয়।

যারা ১৭ রাকাত পড়েন, তারা নিম্নলিখিত রীতি অনুসরণ করেন:

ফরজ:

  • ৪ রাকাত ফরজ

সুন্নত:

  • মোকাদ্দাম: ৪ রাকাত সুন্নত (এশার নামাজের আগে)
  • গায়েবানা: ৪ রাকাত সুন্নত (এশার নামাজের পরে)
  • উইতর: ৩ রাকাত সুন্নত (এশার নামাজের পরে)

নফল:

  • শফা: ২ রাকাত নফল (এশার নামাজের পরে)
  • উইতরের সাথে: ২ রাকাত নফল (উইতরের পূর্বে)
  • তাহাজ্জুদ: ৮ রাকাত নফল (রাতের যেকোনো সময়ে)

মোট:

  • ফরজ + সুন্নত: ১৩ রাকাত
  • নফল: ৪ রাকাত
  • সর্বোচ্চ: ১৭ রাকাত

এই রীতি অনুসরণের কিছু কারণ:

  • কিছু হাদিসে এশার নামাজ ১৭ রাকাত পড়ার কথা বলা হয়েছে।
  • কিছু সাহাবী ও তাবেয়ী এই রীতি অনুসরণ করতেন।

তবে, এই রীতি অনুসরণের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:

  • নিজের ঈমান ও আমলের অবস্থা বিবেচনা করা।
  • অতিরিক্ত নামাজ পড়ার কারণে অন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য যেন বাদ না পড়ে।
  • অন্যদের উপর চাপ না দেওয়া।

এটি মনে রাখা জরুরি যে, সকলের জন্য এশার নামাজ ১৭ রাকাত পড়া আবশ্যক নয়।

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে একজন আলেমের সাথে পরামর্শ করুন। আজকের পোষ্ট পরার পরেও যদি আপনার মনে এই এশার নামাজ ১৭ রাকাত কি কি নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে কম্নেট করে অবশ্যই আমাদেরকে জানাবেন।

এশার নামাজ মোট কত রাকাত

এশার নামাজের রাকাত সংখ্যা নির্ভর করে আপনি কোন মতামত অনুসরণ করছেন তার উপর।

আরোও পড়ুনঃ   ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন? অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বিশ্লেষণ

সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য মত অনুসারে:

  • ফরজ: ৪ রাকাত
  • সুন্নত:
    • মোকাদ্দাম: ৪ রাকাত (এশার নামাজের আগে)
    • গায়েবানা: ৪ রাকাত (এশার নামাজের পরে)
    • উইতর: ৩ রাকাত (এশার নামাজের পরে)
  • নফল:
    • শফা: ২ রাকাত (এশার নামাজের পরে)
    • উইতরের সাথে: ২ রাকাত (উইতরের পূর্বে)

এই মত অনুসারে এশার নামাজ মোট ১৩ রাকাত।

অন্যান্য মতামত:

  • কিছু কিছু মতান্তরে এশার নামাজ ১৭ রাকাত পড়ার কথা বলা হয়েছে।
  • কিছু কিছু মতান্তরে এশার নামাজ ৮ রাকাত পড়ার কথা বলা হয়েছে।

কোন মতামতটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত তা নির্ধারণ করার জন্য একজন আলেমের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এশার নামাজের শেষ সময়

এশার নামাজের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয় সুবহে সাদিক বা ভোরের আলো ফোটার সময় দ্বারা।

সুবহে সাদিক হলো ভোরের আকাশে যে পাতলা আলো দেখা যায়, যা সূর্যোদয়ের পূর্বে আসে।

এশার নামাজের শেষ সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুটি মতামত প্রচলিত:

১) হানাফি মত:

  • এই মত অনুসারে, এশার নামাজের শেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের শুরু।
  • সুবহে সাদিক শুরু হলে আর এশার নামাজ আদায় করা যাবে না।
  • তবে, সুবহে সাদিক স্পষ্টভাবে বোঝা না গেলে, ইশারাক (সূর্যোদয়ের পরের আলো) হওয়া পর্যন্ত এশার নামাজ আদায় করা যাবে।

২) শাফি, মালিকি ও হাম্বলি মত:

  • এই মত অনুসারে, এশার নামাজের শেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের সম্পূর্ণ উদয়।
  • সুবহে সাদিক সম্পূর্ণ উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত এশার নামাজ আদায় করা যাবে।
  • সুবহে সাদিক সম্পূর্ণ উদয় হলে, ইশারাক হওয়ার আগে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা যাবে।

আপনার অবস্থান এবং আপনি কোন মতামত অনুসরণ করছেন তার উপর নির্ভর করে এশার নামাজের শেষ সময় ভিন্ন হতে পারে।

নির্ভুল সময় জানার জন্য:

  • আপনার এলাকার মসজিদের ইমাম বা আলেম-এর সাথে পরামর্শ করুন।
  • নামাজের সময়সূচী প্রদানকারী ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করুন।
আরোও পড়ুনঃ   ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে রচনা: ইতিহাস ও তাৎপর্য

উল্লেখ্য, সুবহে সাদিক স্পষ্টভাবে বোঝা কঠিন হতে পারে। তাই, সন্দেহের বশে ইশার নামাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আদায় করা উত্তম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *