বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি দেশ। এখানকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু এবং বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির কারণে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়। বিশেষ করে শীতকালে, শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি বাংলাদেশে আসে। এই পাখিরা এখানে এসে আমাদের প্রকৃতিকে আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তোলে। চলুন জেনে নিই বাংলাদেশের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

উল্লেখযোগ্য পরিযায়ী পাখির তালিকা:

ক্রমিক পাখির নাম বৈজ্ঞানিক নাম বৈশিষ্ট্য
1 কালিম পাখি Anas acuta লম্বা গলা ও লেজ, জলাশয়ে বসবাস।
2 পাতি সরালি Anas crecca ছোট আকার, সবুজ ডানা ও মাথা।
3 বুনো হাঁস Anas platyrhynchos বড় আকার, উজ্জ্বল সবুজ মাথা ও হলুদ ঠোঁট।
4 লাল শালিক Turdus migratorius লাল বুক, গাছে বাসা বাঁধে।
5 পানকৌড়ি Phalacrocorax niger কালো রঙের, পানিতে ডুব দিয়ে মাছ শিকার করে।
6 সবুজ মাথা পিপি Tringa nebularia লম্বা ঠোঁট, লম্বা পা, চঞ্চল স্বভাব।
7 ছোট কাস্তেচরা Gallinago gallinago লম্বা ঠোঁট ও বাদামী শরীর।
8 ধলাচোখ ময়ূর Vanellus indicus চোখের চারপাশে ধলা বলয়, খোলা মাঠে দেখা যায়।
9 শামুকখোল Anastomus oscitans শামুক ও ঝিনুক খায়, বড় ঠোঁট ও সাদা পালক।
10 চখাচখি Himantopus himantopus লম্বা পা ও সরু ঠোঁট, পানির ধারে বাসা বাঁধে।

পরিযায়ী পাখির আগমন:

বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখির আগমন মূলত শীতকালীন মাসগুলিতে ঘটে। এই সময়ে এরা উত্তর গোলার্ধের শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে উষ্ণতার সন্ধানে দক্ষিণে চলে আসে। বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জলাভূমি, হাওর, বাওর, বিল, নদী এবং সমুদ্র উপকূল এদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পরিযায়ী পাখির মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস, বক, চিল, বাজ, গাংচিল, পানকৌড়ি, শামুকখোল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

পরিযায়ী পাখির প্রভাব:

পরিযায়ী পাখির আগমন বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। এদের উপস্থিতি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পরিযায়ী পাখিরা অনেক সময় ক্ষতিকর পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয় এবং এদের বসবাসস্থলের মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।

আরোও পড়ুনঃ   ৬৪ জেলার ডিসিদের নামের তালিকা: দায়িত্ব, কর্তব্য এবং বর্তমান তালিকা

সংরক্ষণ এবং চ্যালেঞ্জ:

বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখিদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। অবৈধ শিকার, বসবাসস্থল ধ্বংস, দূষণ ইত্যাদি কারণে এদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। তাই পরিযায়ী পাখির সংরক্ষণে আরও সচেতনতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

উপসংহার:

পরিযায়ী পাখিরা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের এক অপরিহার্য অংশ। এদের আগমন আমাদের পরিবেশকে আরও রঙিন ও প্রাণবন্ত করে তোলে। এদের সংরক্ষণে আমাদের সকলের সচেতনতা ও প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই পাখিদের সুরক্ষিত রাখতে আমাদের অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *