বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতার ব্যাখ্যা

আপনি কি বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতার ব্যাখ্যা জানতে ইচ্ছুক? তাহলে আজকের পোষ্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। এখনে আজকে আমরা সবার সাথ এই বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতার ব্যাখ্যা গুলো তুলে ধরব। চলুন শুরু করা যাক।

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতার ব্যাখ্যা

ভূমিকা: “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি” কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের “রূপসী বাংলা” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। এই কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বিখ্যাত ও প্রশংসিত কবিতা। কবি এই কবিতায় বাংলার মুখের অপরূপ সৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন।

কবিতার ব্যাখ্যা:

প্রথম চরণ:

“বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি”

কবিতাটির শুরুতে কবি বলছেন যে তিনি বাংলার মুখ দেখেছেন। এই মুখটি তাঁর কাছে অত্যন্ত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর। তিনি এই মুখের সাথে পৃথিবীর অন্য কোনো মুখের তুলনা করতে পারছেন না।

দ্বিতীয় চরণ:

“তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর”

প্রথম চরণে বাংলার মুখের সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধ হওয়ার পর কবি দ্বিতীয় চরণে বলছেন যে তিনি আর পৃথিবীর অন্য কোনো রূপ খুঁজতে চান না। তাঁর কাছে বাংলার মুখই সকল রূপের শ্রেষ্ঠ।

তৃতীয় ও চতুর্থ চরণ:

“অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে

চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে

ভোরের দোয়েল পাখি।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার গ্রামীণ পরিবেশের সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলছেন যে তিনি অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুর গাছে চেয়ে দেখেন ভোরের দোয়েল পাখি ছাতার মতন বড়ো পাতার নিচে বসে আছে। এই দৃশ্যটি তাঁর কাছে অত্যন্ত মনোরম ও আকর্ষণীয়।

পঞ্চম ও ষষ্ঠ চরণ:

“আমার ঘুম ভাঙে, ঘুমের ঘোরে

মনে হয়, কতদিন যেন এই মুখের দিকে চেয়ে

আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে তিনি যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠেন, তখন তাঁর মনে হয় যে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

আরোও পড়ুনঃ   বাংলাদেশ জাতিসংঘের কততম সদস্য

সপ্তম ও অষ্টম চরণ:

“আরও দেখি, এই মুখখানি কতবার

কতদিন যেন দেখেছি, কতবার যেন

এই মুখের দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে তিনি এই মুখটি বারবার দেখেছেন এবং এই মুখের দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন।

নবম ও দশম চরণ:

“এই মুখখানি আমার চেনা, এই মুখখানি আমার আপন।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার সাথে তার অতীতের সম্পর্কের কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে এই মুখটি তার কাছে চেনা এবং আপন। তিনি এই মুখের সাথে তার জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

একাদশ ও দ্বাদশ চরণ:

“এই মুখখানি আমার প্রাণের, এই মুখখানি আমার স্বপ্নের।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার প্রতি তার গভীর আবেগের কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে এই মুখটি তার প্রাণের এবং স্বপ্নের। তিনি এই মুখ ছাড়া তার জীবন কল্পনা করতে পারেন না।

ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ চরণ:

“এই মুখখানি আমার গানের, এই মুখখানি আমার কবিতার।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার প্রতি তার শৈল্পিক অনুপ্রেরণার কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে এই মুখটি তার গান এবং কবিতার অনুপ্রেরণা। তিনি এই মুখের সৌন্দর্যকে তার শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চান।

পঞ্চদশ ও ষোড়শ চরণ:

“এই মুখখানি আমার ধ্যানের, এই মুখখানি আমার পূজার।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার প্রতি তার আধ্যাত্মিক অনুভূতির কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে এই মুখটি তার ধ্যানের এবং পূজার। তিনি এই মুখের মাধ্যমে ঈশ্বরের সাক্ষাৎ পান।

সপ্তদশ ও অষ্টাদশ চরণ:

“এই মুখখানি আমার জন্মভূমি, এই মুখখানি আমার কর্মভূমি।”

এই দুটি চরণে কবি বাংলার প্রতি তার নিরঙ্কুশ ভালোবাসার কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে এই মুখটি তার জন্মভূমি এবং কর্মভূমি। তিনি এই মুখের মাধ্যমে তার জীবনের সকল স্বপ্ন পূরণ করতে চান।

আরোও পড়ুনঃ   (১০০% কমন) এইচএসসি জীববিজ্ঞান ১ম পত্র সাজেশন ২০২৪ – Hsc Biology 1st paper suggestion 2024

উপসংহার:

“বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি” কবিতাটি বাংলার প্রতি কবির অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক। এই কবিতায় কবি বাংলার মুখের সৌন্দর্য, বাংলার সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক, বাংলার প্রতি তার আবেগ, বাংলার প্রতি তার শৈল্পিক অনুপ্রেরণা এবং বাংলার প্রতি তার আধ্যাত্মিক অনুভূতির কথা অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা হিসেবে বিবেচিত হয়।

অতিরিক্ত তথ্য:

  • এই কবিতাটি একটি সনেট কবিতা।
  • এই কবিতার ছন্দ স্বাধীন।
  • এই কবিতায় বিভিন্ন অলঙ্কার ব্যবহার করা হয়েছে।
  • এই কবিতাটি বাংলা ভাষার সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি প্রমাণ করে।

আশা করি এই পোষ্ট পড়ার মাধ্যমে আপনারা সবাই বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতার ব্যাখ্যা ভালোভাবে বুঝে গেছেন। এর বাহিরেও কোনোকিছু জানার থাকলে এই পোষ্টে  কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *